অবহেলিত ভালোবাসা পর্বঃ -07
# অবহেলিত
ভালোবাসা #
পর্বঃ -07
%লেখক : রুবেল%
পরের দিন অফিসে গিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম কারন ম্যাডাম আমাকে পোরমোশন দিয়েছে ………
আমি – ম্যাডাম আপনাকে একটা কথা বলতে চাই ………?
।
ম্যাডাম – হুম বলেন….
।
আমি – ম্যাডাম আগামি কয়েক মাস আমি বেতন না নিয়ে তা অফিসে জমা করতে চাই, আমার যখন প্রয়োজন হবে তখন তুলে নিব.
।
ম্যাডাম – কিন্তু কেন ?
।
আমি – ম্যাডাম আমার বউ পেগনেন্ট তাই এখন টাকা জমাতে চাই…..
।
ম্যাডাম – ওকে . আমি ম্যানেজারকে বলে দিব……..
।
আমি – ধন্যবাদ ম্যাডাম .
।
তারপর অফিসের কাজ করতে শুরু করলাম , কাজ করতে করতে কখন যে সন্ধা হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি. কাজ শেষ করে বাড়ি গেলাম . চাচী দরজা খুলে দিল . ঘরের দিকে যাচ্ছি হঠাং মারিয়ার সাথে ধাক্কা খেলাম ……
।
মারিয়া – কুতার বাচ্চা তোর এত বড় সাহস তুই আমায় ইচ্ছে করে ধাক্কা দিস …….?
।
আমি – sorry আমি ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয়নি ….
।
মারিয়া – ঠাসসসস্ ঠাসসসস্ তোর মত চরিত্রহীন জানোয়ার এ ছাড়া আর কি করতে পারে ,,,,,
।
আমি – নিশ্ব:চুপ………………( চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল)
।
মারিয়াকে পাশ কাটিয়ে রুমে এসে দেখি ঠোট থেকে রক্ত বের হচ্ছে , তারপর থেকে সকালে সবার ওঠার আগেই আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় আবার রাতে সবাই ঘুমালে তখন বাড়ি আসি , এখন আর চাচা- চাচী ছাড়া আর কারও সাথে দেখা হয় না , এখন আর বাড়িতে খাইনা বাইরে খাই , মাঝে মাঝে চাচী তার বাসা থেকে খাবার এনে খাইয়ে দেয় এভাবে 5 মাস কেটে গেল …………..
একদিন …….
।
মারিয়া – চাচী তোমার ছেলে কোথায় …….?
।
চাচী – রুবেল বাবাত অনেক সকালেই অফিসে চলে গেছে ……
।
মারিয়া – খেয়ে গেছে কি……..?
।
চাচী – সে আর তোমাদের খাবার খাইনা . বাহিরে খাই…..একটা কথা বলব তোমায়..?
।
মারিয়া – হুম বলল…..
।
চাচী – তোমরা ছেলেটার সাথে অনেক বড় অন্যায় করলে এমন নাহয় তার জন্য তোমাদের একদিন কাদতে হয় ………(কাদতে কাদতে)
।
মারিয়া – নিশ্ব:চুপ
।
এ দিকে আমি অফিস শেষ করে বাহিরে গুরে রাত 11.30 মিনিট এ বাসায় আসলাম প্রত্যক দিনের মত চাচী দরজা খুলে দিল . আমি আমার রুমে গিয়ে অবাক হলাম কারণ মারিয় আমার ঘরে . মারিয়া এখাণে কি করছে …(মনে মনে)
।
আমি – আাপনি এখানে কেন…….?
।
মারিয়া – আজ থেকে আমি এখানেই থাকবো….
।
আমি – আমার মত চরিত্রহীন এর সাথে থাকলে সবাই আপনাকে খারাপ বলবে …….
।
মারিয়া – তাহলে আমাকে ডিবোর্স দিয়ে দে ……?( রাগী চোখে )
।
আমি – হুম দিয়ে দিব .. আমার সন্তান এই দুনিয়ায় আসলেই আপনাদের মুক্তি দিয়ে দিব ….
।
মারিয়া – যতদিন ডিবোর্স না হচ্ছে ততদিন আমি এখানেই থাকবো ……
।
আমি – আপনাদের বাড়ি যেখানে খুশি থাকেন , এতে আমার কি ….
।
এরপর থেকে আমি আার মারিয়া একসাথে থাকি . মারিয়া আমার সাথে কথা বলতে চাই কিন্তু এখন আর আমি কথা বলি না ,,,,,,এবাবে আরও 2মাস কেটে গেল এখন আমি আমার সন্তান আর চাচা – চাচীকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারিনা . একদিন ……..
।
আমি – চাচী তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে ……?
।
চাচী – বলল…..
।
আমি – মারিয়ার ডেলিবারি আর কিছুদিন পর হবে ….. আর আমার সন্তান এই দুনিয়ায় আসলেই আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাব ……
।
চাচী – কেন বাবা, আমাদের ছেড়ে থাকতে তোমার কষ্ট হবে না …………? ( ভেজ চোখে)
।
আমি – চাচা আর তোমার সাথে আমি যোগাযোগ রাখব ? কিন্তু তুমি কাওকে কিছু বলবেনা …..
চাচী – ঠিক আছে বাবা….(.কান্না করতে করতে )
।
চাচী চোখের পানি মুছতে মুছতে বাহিরে চলে দেল তখনি……,,
।
মারিয়া – চাচী কি হয়ছে কান্না করতেছ কেন………?
।
চাচী – তোমাদের সবার ইচ্ছা তাড়াতাড়ি পূরণ হতে যাচ্ছে তাই আনন্দে কান্দি………
(কথাটা বলেই চাচী চলে গেল )
।
এভাবেই চলছিল আমার জীবন হঠাং একদিন চাচা ফোন দিল ………
আমি – চাচা বলল……….?
।
চাচা – বাবা মারিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে দেছে আজ ডেলিবারি হবে ….
।
আমি – আমি আসতাছি ……..
।
তারপর আমি ম্যাডামের কাছে গেলাম ……
আমি – ম্যাডাম আসব……..?
।
ম্যাডাম – আসুন …
।
আমি – ম্যাডাম আমার টাকাগুলো এখন লাগবে … আমার বউ হাসপাতালে আছে…….
।
ম্যাডাম – আচ্ছা আমি ম্যানাজারকে বলে দিতাছি …
।
তারপর ম্যানেজারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হাসপাতালে গেলাম , সেখানে গিয়ে দেখি আমার বাবা- মা, মারিয়ার মা – বাবা ও চাচা চাচী সবাই আছ …. আমি কারো সাথে কথা না বলে চাচীকে বললাম
।
আমি – চাচী এখন কি অবস্থা …………….?
।
চাচী – বাবা ডাক্তার এখনো ভিতরে …
।
তখনি ডাক্তার বের হল ….
আমি - ডাক্তার কি অবস্থা…..?
।
ডাক্তার – আপনি কে …..?
।
আমি – আমি মারিয়ার স্বামী (ইচ্ছা না থাকা সত্বেও বললাম )
।
ডাক্তার – আপনার ছেলে হয়ছে , মা ছেলে দুজনি ভালো আছে ……..
।
আমি – আমি কি আমার ছেলে কে দেখতে পারি …..?
।
ডাক্তার – হুম , আপনি ভিতরে যান …
।
আমি ভিতরে গিযে দেখি , আমার ছেলে তার মায়ের পাশে খেলছে …
।
মারিয়া – আমাদের সন্তান দেখতে রাজপুত্রের মত হয়ছে তাই না…..?
।
আমি – ম্যাডাম ভুল করছেন এ আমাদের সন্তান নই , এ শুধু আমার সন্তান . মনে নেই আপনি তাকে মেরে ফেলতে চাইছিলেন তাই এই সন্তান শুধু আমার …
।
মারিয়া কিছু বলতে যাবে তখনি সবাই ভিতরে আসল …….
মা – দেখিত আমার দাদুভাই কে কেমন দেখতে হয়ছে ….. দে আমার কাছে দে দাদুভাইকে……
।
আমি – ভুল করছন এই বাচ্চার সাথে আপনাদের কোনো সম্পর্ক নেই , এটা আমার ছেলে তাই একে আমি কারো কাছে দিব না ……..
।
মা- বাবা – কি বলছিস এসব ওতো আমাদেরও নাতি …….?
।
আমি – আপনাদের ত ছেলেই নেই নাতি আসবে কোথা থেকে ……
।
আমার কথায় সবাই চুপ হয়ে গেল ……আমি – চাচা- চাচী আমি আসার আগ পর্যন্ত তোমরা আমার ছেলেটাকে দেখবে , আর মারিয়া আপনাকে ধন্যবাদ আমার ছেলেকে বাচঁতে দেওয়ার জন্য ……
তারপর আমি হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে অফিসে মিষ্টি পাঠিয়ে আবার হাসপাতালে ফেরত আসলাম .
বিকেলে আমার আর আমার সব কাপড় গুছিয়ে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম , কেবিণে ঢুকে দেখি মারিয়া ঘুমিয়ে আছে তার পাশে আমার রাজপুত্রটাও ঘুমিয়ে আছে , আমি মারিয়ার হাতের নিচে দুইটা কাগজ রেখে আমার ছেলেকে নিয়া চলে আসলাম .
এদিকে সবাই হাসপাতালে দিয়ে দেখে বাচ্চা নেই , মারিয়া দেখে তার হাতের নিচে দুইটা কাগজ , একটা খুলে দেখে ডিবোর্স পেপার . আরেকটা খুলে দেখে এটা একটা চিঠি .
।
মারিয়া চিঠিটা খুলল ……
।
আমি জানিনা কি দুষের শাষ্তি দিলেন আপনারা আমাকে . আমি ত শুধু আপনাদের নিজের জীবনের থেকে বেশি ভালোবাসছিলাম . তার বিনিময় আপনারা আমাকে চরিত্রহীন প্রমাণ করলেন . তাই আমি আর আমার ছেলে আপনাদের জীবন থেকে চলে গেলাম . যাওয়ার আগে আপনার ইচ্ছে পুরণ করে গেলাম আপনাকে মুক্তি দিয়ে . আজকের পর থেকে আমি অথবা আমার ছেলে আর কখনো আপনাদের জীবণে বাধা হয়ে কখনো আসব না .
ইতি
চরিত্রহীন রুবেল .
।
চিঠিটা পড়েই মারিয়া কান্নায় ভেগে পড়ল তারপর একে একে সবাই চিঠিটা পড়ল …..হঠাং আমার অফিসের ম্যাডাম হাসপাতালে গেল আমার ছেলেকে দেখতে . ম্যাডাম হাসপাতালের কেবিনে ঢুকতেই
মারিয়া – একি আপনি এখানে কেন …..? আমার সংসার ভেগে মজা নিতে আসছেন …….?
।
ম্যাডাম – কি যাতা বলছেন .. আমি তো রুবেল সাহেরের বাচ্চাকে দেখতে আসছি ……!
।
বাবা – মারিয়া তুমি কি একে চিন ……..?
।
মারিয়া – হ্যা বাবা একেই আমি রুবেলের সাথে হোটেলে দেখছি………
।
বাবা – আপনি তাহলে সে যার সাথে রুবেলের সম্পর্ক ছিল…..?
।
ম্যাডাম – কি আবুল- তাবুল বলছেন আমি রুবেল এর অফিসের বস . আর রুবেলের সাথে আমার সম্পর্ক থাকবে কেন …? সে যে বিবাহিত তাত আমরা সবাই জানি ……
।
বাবা – তাহলে আপনি রুবেলের সাথে হোটেলে কি করতেন ……….?
।
ম্যাডাম – আমি আর রুবেল অনেক সময় ক্যালেন্ট এর সাথে দেখা করতে যেতাম কেননা তখন আমাদের অফিসে কাজ চলছিল.ম্যাডামের কথা শুণে বাবা বসে পড়ল .
ম্যাডাম – মারিয়া আপনার ভাগ্য ভালো তাই রুবেল এর মত স্বামী পাইছ . এমন কিছু কইরেনা যাতে পরে পস্তাতে হয় এই বলে ম্যাডাম চলে গেল
।
এদিকে সবাই আমাকে খুতেছে , আমি নিজের শহরকে একবার দেখে ট্রেনে ওঠে পড়লাম …….
ট্রেন ছেড়ে দিল সিলেটের উদ্দেশে ………..ওদিকে নাজমুল খবর পেল আমার ছেলের কথা তাই তারাও দেখতে গেল …..
নাজমুল আর সাম্মি কেবিণে ঢুকতেই ……..
।
আম্মু – তুমি এখানে কি করছ…………..?
।
বাবা – তুমি চেন এদেরকে ……..?
।
আম্মু – হুম এই মেয়েকেই আমি আর মারিয়া রুবেলের সাথে ডাক্তারের চেমবারে দেখছি ……
।
মারিয়া – তুমি ত রুবেলের আরেক বাচ্চার মা তাইনা ……..
।
সাম্মি – ঠাসসসসস্ , রুবেল আমার বড় ভাইয়ের মত আর তুমি কি বলছ তোমার লজ্জা করেনা ……..
।
সাম্মির কথায় মারিয়া দাড়ানো থেকে ধপ করে বসে পড়লো ….
আম্মু – তাহলে সে দিন তুমি আর রুবেল একসাথে ডাক্তারের চেমবারে কি করছিলে …………..?
।
সাম্মি – এই হচ্ছে আমার স্বামী ( নাজমুলকে দেখিয়ে ) , নাজমুল আর রুবেল ভাই ভালো বন্ধু , সে দিন নাজমুলের শরীর খারাপ ছিল তাই রুবেল ভাইকে আমি জোর করে আমার সাথে নিয়ে যায়, আর আপনারা কিনা এসব ভাবছেন ছি :
।
সাম্মির কথা শুনে আম্মু শুধু চোখের পানি ফেলছে , এদিকে আব্বু ….
আব্বু – তোমাদের জন্য আমি আমার ছেলেকে ভুল বুজে পশুর মত মেরেছি ….
তাকে খারাপ কথা বলেছি , তাকে খাওয়ার খুটা দিছি . একটা বারের জন্য তার কথা শুনিনি ,
তাই সে রাগ করে আজ তার ছেলেকে নিয়ে চলে গেছে … (কান্না করতে করতে )
।
তারপর নাজমুল সবাইকে বলল আমি তাদের কিভাবে সাহায্য করেছি …
ওদের কথা শুনে সবাই কান্নাই ভেগে পড়ল …..
এদিকে আমি ট্রেনে বসে আছি হঠাং একটা মেয়ে এসে পাসে বসল আর বলল………….
Comments
Post a Comment