অবহেলিত ভালোবাসা পর্বঃ -09 শেষ
# অবহেলিত ভালোবাসা #
পর্বঃ -09 শেষ
%লেখক : রুবেল%
আমি – প্লিজ আমাদের বিরক্ত না করলে খুশি হব , বলেই রাজুকে নিয়ে আমার ঘরের দিকে যেতে লাগলাম তখনি………
মারিয়া – ওদিকে কোথায় যাচ্ছ ………? আমাদের ঘরতো ওপরে ……….!
।
আমি – আমি আমাদের ঘরে নই বরং আমার ঘরে যাচ্ছি . ওপরের ঘর আপনার আমার না . (বলেই রুমে চলে গেলাম )
।
কিছুখন পর মাজেদা চাচী আসল …
চাচী – কেমন আছ বাবা ……….
।
চাচী – ভালো চাচী . তুমি কেমন আছ,,,,,,,,,,,,, (জরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে )
।
চাচী – ভালো বাবা , এই কি আমাদের দাদু ভাই (রাজুকে দেখিয়ে বলল…..)
।
আমি – হুম …..
।
চাচী – দাদুভাই আস আমার কাছে ……..
।
(রাজু আমার দিকে তাকিয়ে আছে )
আমি – আব্বু ওনি তোমার আরেক দাদুভাই যাও তার কাছে ……..
।
তারপর চাচী রাজুকে কুলে নিযে অনেক আদর করল , রাজুকে চুমু খাচ্ছিল তখনি মা বাবা আর মারিয়া আসল.বাবা – রুবেল আমাদের দাদুভাইকে আমাদের কাছে দে ……..
।
আমি – আপনারাতো আপনাদের ছেলেকেই হারিয়ে ফেলেছেন . মনে আছে আমাকে চরিত্রহীন বলে পশুর মত মেরেছিলেন … ? তাছাড়া আমাকে আপনারা না খাইয়ে মারতে চাইছিলেন ….. আমরাতো আপনাদের কাছে মৃত .
।
মা – বাবা আমাদের ভুল হয়ে গেছে , আমাদের মাফ করে দে , (হাত ধরে কান্না করে )
।
বাবা – তুই চাইলে আমি তোর পা ধরে মাফ চাব তাও আমাদের তুই মাফ করে দে …(হাত ধরে কান্না করে )
।
আমি – মাফ করে দিতে পারি যদি তোমরা আমার পুরোনো দিন গুলি ফিরত দিতে পার তবে ………..
।
বাবা –মা কিছু বলতে যাবে তখনি ………..
।
আমি – চাচী আমরা এখন একটু রেস্ট নিব প্লিজ ওনাদের যেত বলল……..
(আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছ তোমরা এখন বুঝ কেমন লাগে .. মনে মনে …)
।
তারপর সবাই চলে গেল আমি আর রাজু র্ফেস হলাম .
র্ফেস হয়ার পর রাজু বলল – আব্বু আমার অনেক খুদা পেয়েছে …………?
।
আমি – তাই , আচছা চল আমরা খেয়ে আসি ……
।
রাজুকে কুলে নিয়ে বাইরে যেতে লাগলাম তখনি……
বাবা – দাদুভাইকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস বাবা……
।
আমি – বাইরে ওকে খাইয়ে নিয়া আসি …………
।
বাবা – বাইরে কেন , বাড়িতে রান্না হয়ছে , আমাদের সাথে খাবি চলল…
।
আমি – এ বাড়ির খাবার আমার জন্য একসময় আপনি বন্ধ করেছেন , তাই আর এই বাড়ির ভাত আমার গলা দিয়ে নামবে না……
।
আমার কথা শুনে বাবা আর মা কাদতে লাগলো …………..
রাজু – বাবা আমি দাদা দাদির সাথে খাব ………..
।
আমি – কিন্তু…….(চাচী থামিয়ে বলল)
।
চাচী – বাবা ওনারা তুমি চলে যাবার পর তাদের ভুল বুঝতে পারছে ….প্রতিদিন তোমার জন্য কান্না করত তুমি আর তাদের প্রতি রাগ করে থেক না .
।
চাচীর কথা শুনে আর মা বাবার প্রতি রাগ করে থাকতে পারলাম না ……..
আমি – আব্বু আম্মু আমাকে একটু জরিয়ে ধরবে ………(রাজুকে কুল থেকে নামিয়ে বললাম )
।
বাবা মা তারা এসে আমাকে জরিয়ে ধরে আদর করতে লাগল আর কাদতে লাগলো ……….
বাবা মা – আমাদের মাফ করে দে আমরা না ভুজে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলছি ….
।
আমি – তোমরা আমার বাবা মা তোমাদের মাফ চাইতে হবে না ……………
।
বাবা- দাদুভাই আমার কাছে আস ………….
।
(রাজু আমার দিকে তাকিয়ে আছে )
আমি – যাও ..
।
তখনি রাজু বাবা মার কাছে গেল , বাবা মা তাকে পেয়ে পাগলের মত চুমু খেতে লাগল …
তারপর সবাই খাবার টেবিলে বসলাম .
।
রাজু – আব্বু আব্বু………..
।
আমি – কি আব্বু ……….
।
রাজু – আমি আজকে দাদা – দাদীর সাথে খাব
।
আমি – আচ্ছা ………..
।
তারপর হঠাং দেখলাম মারিয়া আমাদের দিকে করুন দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে ..
সবাই রাজুকে খাইয়ে দিচে্ছ হঠাং মারিয়া রাজুর মুখে ভাত দিতে যাবে তখনি …….
রাজুকে টানদিয়ে আমার কাছে নিয়া আসলাম ….
আমি – আপনি আমার ছেলেকে ছুবেন না …..
।
মারিয়া – রুবেল প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও .. আমার ছেলেকে একটু আমার কাছে দাও …..
।
আমি – আমি আপনাকে কখনই মাফ করতে পারব না আর আপনাকে আমি ডির্বোস দিয়ে দিছি তাহলে আপনি এখনো এখানে কি করেন …..
।
মারিয়া - আমি ডির্বোস পেপার ছিড়ে ফেলছি , আমার ডির্বোস চাইনা আমার শুধু তোমাদের চাই …
।
আমি – সেটা আর কখনো সম্ভব না … (বলেই আমি চলে আসলাম আমার ঘরে )
।
তারপর ঘুমিয়ে পড়লাম ওদিকে রাজু তার মার সাথে কানামাছি খেলছে হঠাং মারিয়ার সাথে রাজু ধাক্কা খেয়ে সিড়ি থেকে পড়ে যায় আর রাজু চিংকার করে . রাজুর চিংকারে আমার ঘুম ভেগে যায় আর আমি গিয়ে দেখি মারিয়ার জন্য রাজু ব্যাথা পাইছে , মারিয়া রাজুকে ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছে তখণি আমি মারিয়ার হাত ধরে দাড় করিয়ে চড় মারি …
।
আমি – তোকে বলছি না আমার ছেলেকে ধরবি না ..তোর জন্য আজ আমার ছেলে ব্যাথা পাইছে তুই কি আমাদের মেরে তারপর শান্ত হবি …..
।
আমার কথা শুনে সবাই আসল …
মারিয়া – আমি ইচ্ছে করে কিছু করিনি বিশ্বাস কর ….( কাদতে কাদতে বলল)
।
আমি – তোকে বিশ্বাস করে আমার জীবনের বড় ভুল করেছিলাম . তুই আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা ..
।
মারিয়া আর কিছু না বলে কাদতে কাদতে চলে গেল (মারিয়ার কান্না দেখে আমারও কষ্ট হতে লাগলো ..)
সারাদিন আর মারিয়া আমাদের সামনে আসল না ….
হঠাং মারিয়ার ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম দেখলাম মারিয়া আমার একটা পুরনো ছবি নি্য়ে কথা বলছিল আর বুকে নিয়ে কান্না করছিল ….
হঠাং রাজু – আব্বু আমি আম্মুর কাছে যায় …………?
।
আমি – ওকে যাও কিন্তু আবার চলে আসবে……..
।
রাজু – হুম …………
।
তারপর রাজু মারিয়ার কাছে গেল …………
।
রাজু – আম্মু আম্মু কি কর তুমি
মারিয়া – রাজু বাবা তুমি এখানে কেন তোমার আব্বু দেখলে রাগ করবে .. তুমি তোমার আব্বুর কাছে যাও ………………
রাজু – আব্বুই দিয়ে গেল আমাকে তোমার কাছে আবার পরে চলে যেতে বলছে ….
।
মারিয়া – তাই …….. তাহলে আস আব্বু
।
তারপর মারিয়া রাজুর মুখে অনেকগুলো চুমু খেয়ে বুকে জরিয়ে নিল ………
এবাবে কয়েকদিন কেটে গেল হঠাং একদিন আমি আর রাজু ঘুরতে বের হলাম তখনি বাবা বলল মারিয়াকে সাথে নিতে .
।
আমি – ওনার কাজ আছে যেতে পারবেনা …..
।
মারিয়া – আমার কাজ নেই তুমি দাড়াও আমি আসছি ………..
।
আমি – না আমি আপনাকে নিয়ে যেতে পারব না ….
(আমার কথা শুনে মারিয়া আর কিছু বলল না শুধু চোখের পানি ফেলছে …)
।
রাজু – আব্বু আমি আম্মুর সাথে যাব ……..
।
আমি – রাজু জিদ করলে মাইর দিব কিন্তু ….
।
রাজু – তুমি খুব খারাপ , তুমি সবসময় এমন কর আম্মুর সাথে আমি তোমার সাথে থাকব না , আমি আম্মুর সাথে থাকব ……
।
রাজুর কথা শুনে নিজের অজান্তেই চোখে পানি এসে গেল …. তাই বাড়ি থেকে চলে আসলাম ,
সবাই ফোন দিচ্ছে তাই ফোন ফেলে দিলাম তারপর অনেক ভেবে রাজুকে রেখেই আমি সিলেট চলে আসলাম ওদিকে রাতে বাড়ি যাচ্ছিনা দেখে সবাই চিন্তা করতে লাগলো
।
রাজু – আমি আব্বুর কাছে যাব .. আব্বু আমার ওপর রাগ করেছে , আমাকে আব্বুর কাছে নিয়ে যাও . আমি আর আব্বুকে রাগাবো না …….
।
মারিয়া – হা বাবা নিয়ে যাব ..
।
রাজু – তুমি আমায ধরবে না তোমার জন্য আমার আব্বু আমাকে ফেলে চলে গেছে , তুমি ভালো না , তুমি পচা ,
।
মা- দাদুভাই শান্ত হও আমরা তোমার আব্বুর কাছে নিয়ে যাব …
।
মার কথা শুনে রাজু মার গলা জরিয়ে ধরে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়ে .
সবাই ভাবছে রুবেলকে ফিরে পেয়ে আবার হারালাম …
তারপর সবাই আমার ব্যাগ চেক করে আমার সিলেটের ঠিকানা পাই . তারপর তারা সিলেটের উদ্দেশে আসে এদিকে আমি ছেলের জন্য মন খারাপ করে বাসায় বসে আছি হঠাং কলিংবেল বাজে .আমি দরজা খুলতেই রাজু এসে আমার পা জরিয়ে দরে …….
।
রাজু – আব্বু তুমি আমার ওপর রাগ করছ …….
।
আমি – না আব্বু …..
।
রাজু – মিথ্যা বলছ , তুমি রাগ করছ তাই আমাই ফেলে চলে আসছ……
।
তারপর সবাই কে রুমে নিয়ে আসলাম তখনি ………..
মারিয়া – আমি যানি আমি যে ভুল করছি তার মাফ হয়না তাও পারলে আমাকে মাফ করে দিও , যদি তুমি তোমাদের জীবনে আমাকে না রাখতে চাও তাহলে তোমাদের জীবনে আর থাকব না , অনেক দুরে চলে যাব যেখান থেকে আর ফেরা না যায় . চলি ভালো থেক …….. (বলেই কাদতে কাদতে মারিয়া চলে গেল)
।
আব্বু – রুবেল মেয়েটা পাঁচটা বছর তোর জন্য অনেক কেদেছে .. তাকে আর কাদাস না বাবা…….
।
মা- মারিয়া তুই চলে আসার পর মরার চেষ্টাও করছে ওর মাথা ঠিক নেই , ওকে আর কষ্ট দিস না . আরও কষ্ট দিলে হয়ত মেয়েটা নিজেকেই শেষ করে দিবে …..
।
রাজু – আব্বু তুমি আমার আম্মুকে মাফ করে দেও . আমি আম্মুর সাথে থাকতে চাই..
।
আমি – ওকে আব্বু তুমি দাদা দাদির সাথে থাক . আমি তোমার আম্মুকে নিয়ে আসি .. …
।
রাজু – তাড়াতাড়ি যাও …………..
।
তারপর আমি বাইরে এসে দেখি মারিয়া রাস্তায় কান্না করতে করতে চলে যাচ্ছে তখনি মারিয়ার হাত পিছন থেকে টান দিয়ে আমার আমার বুকের সাথে জরিয়ে ধরলাম …………
।
আমি – কোথায় চাচ্ছেন , আমার মেয়ের মা হবে না ………..?
।
মারিয়া – নিশ্ব:চুপ ( শুধু জরিয়ে ধরে চোখের পানি ফেলছে….)
।
তার পর মারিয়াকে নিয়ে বাসায় আসলাম , রাতে রাজু ওর দাদা দাদির সাথে থাকতে গেল …….
মারিয়া আর আমি শুয়ে আছি হঠাং মারিয়া আমার বুকে মাথা রাখলল…..
।
মারিয়া – রুবেল আমি আর কখনো এরকম ভুল করবনা , আমাকে মাফ করে দাও …..
।
আমি – এই পাগলি আমি তোমাই মাফ করে দিচ্ছি ……….
।
মারিয়া – তাহলে আমাকে একটা জিনিস দিবে ……..
।
আমি – কি ……………..
।
মারিয়া – আমাকে একটা ছোট পরি এনে দিবে আমার কুলে ……
।
আমি – তাহলে ত এখনি কাজ শুরু করতে হয় …..
।
তারপর মারিয়াকে জরিয়ে আদর করতে শুরু করলাম . এর পর থেকে তারা সুখে শান্তিতে সংসার করতেছে……………
,
.
.
………………………..{End}………………………
Comments
Post a Comment