পিচ্চি বউ পর্ব - 07

# পিচ্চি বউ # Part - 07 % লেখক : রুবেল % পার্কে আসলাম হাটতে হাটতে . তারপর কিছুখন পার্কে বসে রিয়া কথা ভাবতেছিলাম . হঠাং মনে হল আমার পাশ দিয়ে আমার খুব কাছের একজন গেল . ভালোভাবে তাকাতেই দেখলাম হ্যা এত আমার খুব পরিচিত . কিন্তু তারপাশে কে . ..? তারপর তাদের সামনে যেতেই আমি অবাক কারন সে আর কেউ না আামার রাইসা . আর তার সাথে অন্য একটা ছেলে . যা দেখে খুব অবাক হলাম …………… আমি – রাইসা তুমি এখানে কেন ………. আর এই ছেলেটা কে ……………? ( অবাক হয়ে ) । রাইসা আমাকে দেখে ভুত দেখার মত অবাক হয়ে গেল তখনি………….. ছেলেটি – রাইসা তুমি কি এই ছেলেটাকে চিনো ………? ( আমাকে দেখিয়ে বলল ) । রাইসা – হ্যা , ওর নাম রুবেল , আমার বন্ধু হয় ……….. । আমি রাইসার কথা শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না . যাকে জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি সে কিনা অন্য ছেলের কাছে আমায় বন্ধু বলছে …. ছেলেটি – আচ্ছা তুমি কথা বলল আমার একটা কল করার আছে . আর তোমার বন্ধুকে আমাদের বিয়ের দাওয়াত দিও ……..(বলেই সে কল করতে দুরে চলে গেল ) । আমি – রাইসা ছেলেটি কি বলল আবুল তাবুল …………….?( অবাক হয়ে ) । রাইসা – শাকিল ঠিকি বলেছে সামনে আমার আর শাকিলের বিয়ে …………..( মাথা নিচু করে ) । আমি – রাইসা এখন মজা করো না , আজ আমি আর রিয়া ডির্বোস এর জন্য আবেদন করব . তারপর ডিবোর্স হলেই আমি তোমাকে বিয়ে করব………….( ভয়ে ভয়ে ) । রাইসা – iam sorry রুবেল . আমি তোমাকে তোমাকে বিয়ে করতে পারব না . কারণ আমি শাকিলকে ভালোবাসি আর ওকেই বিয়ে করতে চাই . . . . . । আমি – কি বলছ এসব . তুমিত আমায় ভালোবাস তাহলে কেন এমন করছ …………….? । রাইসা – তোমায় বললাম না , আমি তোমায় ভালোবাসি না . আর আমি তোমায় বিয়ে করে আমার জীবন নষ্ট করতে চাইনা . তুমি আমার থেকে দুরে থাক . . . .( চিংতকার করে বলল) । রাইসার কথাই সবাই আমার আর রাইসার দিকে তাকিযে আছে , আর এদিকে আমার কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে , মনে হচ্ছে আমার বুকে কেউ চুরি ঢুকিয়ে দিয়েছে . নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো . । আমি – তাহলে এত দিন আমার সাথে তোমার কি ছিল … ? তুমি কি এত দিন অভিনয় করেছিলে ………….? । রাইসা – জানিনা …………( মুখ ঘুরিয়া ) । রাইসার ব্যবহার আর কথায় রাগ ওঠে গেল ………… আমি – তুমি না জানলেও আমি জানি , আসলে তুমি কখনো আমায় ভালোবাসনি . তুমি আমায় ব্যবহার করেছ তোমার প্রয়োজনে . আর তাই ভালোবাসার নাটক করেছ আমার সাথে . আসলে তোমার আমাকে না আমার টাকাকে প্রয়োজন ছিল . আর আজ যখন আমার থেকে বেশি বড় লোক ছেলে পেলে তখন আমার আর কোন প্রয়োজন নাই তোমার জীবনে তাইনা . . . .( চোখের পানি মুছে বললাম ) । রাইসা – নিশ্ব:চুপ ………………….. । অমি – তোমার চুপ থাকা প্রমান করে আমি যা বলছি তা সব সত্যি . জান আজ নিজের প্রতি আমার ঘৃণা হচ্ছে কারণ আমি তোমার মত মেয়ের জন্য রিয়াকে দুরে রেখেছিলাম . তাকে অপমান করেছি . তাকে কষ্ট দিয়েছি . আমি এতটাই বোকা ছিলাম যে আসল আর নকলের পার্থক্য বুঝতে পারিনি যে আমাকে সত্যি ভালোবাসত তাকে কখনো ভালোবাসিনি আর যে আমায় কখনো ভালোই বাসত না তাকে পাগলের মত ভালোবেসে গেছি . তোমায় অনেক ভালোবাসতাম কিন্তু আজ থেকে আমার জীবনে তোমার কোনো যায়গা নেই . আজ থেকে রিয়ায় আমার সব . আমার যায়গায় হয়ত অন্যকেউ হলে হয়ত তোমায় চর মেরে গাল ফাটিয়ে দিত কিন্তু আমি সেটা পারবনা কারন একসময় তোমায় ভালোবাসছিলাম আর একবার যাকে ভালোবাসা যায় তাকে কষ্ট দেওয়া যায় না . শুধু একটাই প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ যেন তোমায় সুখে রাখে . . . .( কথাগুলো বলে চোখ মুছতে মুছতে সেখান থেকে চলে আসলাম ) । এখন রাস্তা দিয়ে হাটছি আর রিয়ার সাথে কাটানো সময়গুলো মনে পরছে . মেয়েটা আমায় খুব ভালোবাসে . তাইতো এত অবহেলা আর কষ্টের পরও আমায় ছেড়ে যেত না . কিন্তু আজ যেটা করেছি রিয়ার সাথে তারপর কি রিয়া আমায় মাফ করবে …….? এসব ভাবতে ভাবতে যাচ্ছিলাম হঠাং একটা ফুলের দোকান দেখতে পেলাম , তাই রিয়ার জন্য গোলাপ ফুল আর চকলেট নিয়ে বাসার দিকে যেতে যেতে ভাবছি আজ পিচ্চি বউকে বুকে টেনে নিয়ে বলব আমি তোমায় ভালোবাসি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি এসব ভাবতে ভাবতে বাড়ির সামনে আসলাম . বাসার কিলিংবেল বাজাতেই আম্মু দরজা খুলে দিল …… আম্মু – এতখন কোথায় ছিলি ……………? । আমি – একটু বাইরে গিয়েছিলাম ……….. । বলেই আমার ঘরের দিকে গেলাম , ঘরে দেখি ঘরে রিয়া নেই . . . . আমি – আম্মু , আম্মু , ও আম্মু ……..( ডাকতে ডাকতে আম্মুর কাছে গেলাম ) । আম্মু – কি হয়েছে ডাকছিস কেন ……………? । আমি – রিয়া কোথায় ওকে কোথাও পাচ্ছিনা ……………….?( হাপাতে হাপাতে ) । আম্মু – কেন তুই জানিস না . . . . . . .( অবাক হয়ে ) । আমি – কি জানব …………….?( অবাক হয়ে ) । আম্মু – রিয়াতো বলল তোকে বলেছে কোথায় যাচ্ছে তাই আমাদের কিছু বলল না ……….. । আমি – মানে ……… কি বলছ এসব রিয়াত আমায় কিছু বলেনি ………( ভয়ে ভয়ে ) । আম্মু – রিয়াত আমায় বলল তোকে বলছে তাই আমি আর কিছু বলিনি ……………? । আম্মুর কথাই ভয়ে গলা শুকিয়ে গেল তাহলে কি রিয়া আমায় ছেড়ে চলে গেল . কথাটা ভাবতেই হাত থেকে ফুল আর চকলেট পরে গেল . কোন রকমে নিজেকে সামলে নিয়ে শশুর বাড়ি ফোন দিলাম . অমি – হ্যালো……………….. । শাশুরি মা- হ্যা বলল বাবা ………… । আমি – আম্মু রিয়া আপনাদের ওখানে গেছে ………..? । শাশুরি মা – নাতো বাবা কেন কি হয়ছে ……………..? । তারপর শাশুরি মাকে সব বলাম সে শুনে বলল…. শাশুরি মা – বাবা তুমি অনেক বড় ভুল করে ফেলছ , আমার মেয়েটা খুব অভিমানি , সে যাকে ভালোবাসে তাকে জীবন দিয়ে ভালোবাসে , আর যদি অভিমান করে তাহলে তার অভিমান ভাঙ্গা খুব কঠিন . হয়ত তোমায় ছেড়ে চলে গেছে . তোমার একটা ভুলের জন্য আমরা আমাদের মেয়েকে না হারায় . . . . .(কেদে কেদে বলল) । শাশুরি মায়ের কথা শুনে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচে্ছ . নিজের প্রতি ঘৃনা হচ্ছে . আজ নিজেকে পৃথিবীর সব চাইতে অসহায় লাগছে . . . তাই আর দেরি না করে বেরিয়ে পড়লাম রিয়াকে খুজতে কিন্তু কোথাও খুজে পেলাম না .তাই রাতে বাড়ি ফিরলাম . বাড়ি ফিরতেই আম্মু বলল ………… আম্মু – আমার মেয়ে কোথায় . . . . ? । আমি – অনেক খুজেছি কোথাও পাইনি . সে আমার ওপর রাগ করে আমায় ছেড়ে চলে গেছে …… (আম্মুকে জরিয়ে ধরে কেদে কেদে বললাম ) । তারপর আম্মুকে ছেড়ে ঘরে গিয়ে রিয়ার রেখে যাওয়া স্মৃতি গুলোর কথা ভাবছি আর কাদছিলাম . আজ খুব বলতে ইচ্ছা করছে . আমি আমার রিয়াকে ভালোবাসে . আমি আমার পিচ্চি বউটাকে খুব ভালোবাসি . কিন্তু আজ আমার কথা শুনার জন্য রিয়া আমার পাশে নেই . আজ নিজের দোষে রিয়াকে হারালাম . এসব ভাবছি আর চোখের পানি ফেলছিলাম . তখনি হঠাং চোখ পড়ে টেবিলে রাখা কাজজের উপর . আমি কাগজটা হাতে নিলাম . কাগজটা একটা চিঠি . হাতের লেখা দেখে মনে হচ্ছে এটা আমার পিচ্চির হাতের লেখা .তারমানে এগুলো আমার পিচ্চি বউ রেখে গেছে …….তারপর চিঠিটা খুললাম . সেখানে যা লেখাছিল তাতে আমি আর নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না………………. . .

Comments

Popular posts from this blog

অবহেলার শেষ পরিণতি পর্ব - 05

অবহেলার শেষ পরিণতি পর্ব - 06

অবহেলার শেষ পরিণতি পর্ব - 04