পিচ্চি বউ পর্ব - 11
# পিচ্চি বউ #
Part – 11
% লেখক : রুবেল %
তারপর রিয়ার দেওয়া ঠিকানা নিয়া বের হয়ে পড়লাম . আজ যেন কেন গাড়িটাও তাড়াতাড়ি চলতে চাচ্ছে না . অনেক কষ্টে 20 মিনিট পর রিয়ার বাসার সামনে এসে দাড়ালাম . দরজায় কলিংবেল বাজাতেই রিয়া দরজা খুলে আমায় জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো …..
আমি – কি হয়েছে তুমি কাদছ কেন …………?
।
রিয়া - ………. (কাদতেই আছে)
।
আমি – কি হয়েছে বলবে নাকি আমি চলে যাব ………? (রাগী গলাই)
।
রিয়া – রুবেল আমাদের মায়া ……………. (বলেই কাদতে লাগলো)
।
আমি – আমাদের মায়া মানে …………..?( অবাক হয়ে )
।
রিয়া – হ্যা মায়া তোমার আর আমার মেয়ে ………..( কাদতে কাদতে )
।
আমি – কিন্তু কি হয়েছে মায়ার ……………?
।
রিয়া – মায়াকে তোমার কাছে যেতে দেইনি আর তোমায় আব্বু ডাকতে মানা করছি বলে কাল থেকে কিছু খাইনি . আজ সকাল থেকে শরীরে অনেক জ্বর . তোমায় যখন কল করেছি তখন থেকে মায়া বেহুশ কি , আমি করব কিছু বুঝতে পারছি না ……….( কেদে কেদে )
।
তারপর আমি রিয়াকে ছেড়ে মায়ার ঘরের দিকে গেলাম গিয়ে দেখি একজন মহিলা মায়ার মাথায় পানি ডালছে আর ঙ্গান ফেরানোর চেষ্টা করছে . আমি তাড়াতাড়ি করে মায়াকে কুলে নিয়ে মায়া আর রিয়াকে গাড়িতে বসালাম তারপর খুব দ্রুত গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম . তারপর চিতকার করে ডাক্তারকে ডাকতে লাগলাম ……….
তারপর ডাক্তার এসে মায়াকে কেবিনে নিয়ে গেল . এখন আমি আর মায়া মায়ার কেবিনের বাইরে বসে আছি . কিছুখন পর একজন নার্স আসল …..
।
নার্স – রোগীর নাম কি ……………?
।
আমি – মায়া …
।
নার্স – সম্পূরর্ণ নামটা লাগবে ………….?
।
আমিতো মায়ার সমপূর্ন নাম জানি না তাই অসহায় দৃষ্টিতে রিয়ার দিকে তাকালাম .
রিয়া – ওর সম্পূর্ন নাম হলো নুসরাত জাহান মায়া …
।
তাহলে আমার ছোট পরিটার নাম নুসরাত জাহান মায়া( মনে মনে )
।
নার্স – গারজেন্টের নাম কি ……………?
।
আমি – মি . রুবেল ……..
মায়া – মিসেস মায়া ……
।
দুজনে একসাথে বললাম .
।
নার্স – যে কোন একজনের নাম দেওয়া যাবে ……………?
।
রিয়া – আমি ওর মা আমার নামটা লিখে নিন …
।
তারপর নার্স চলে গেল . . .
আমি – মায়ার গারজেন্টের জায়গায় আমার নামটা দিলে খুব খতি হত কি ………….? (করুন গলাই)
।
রিয়া – হ্যা কারন আমি চাইনা মায়া তোমার পরিচয় নিয়ে বেচে থাকুক, আমি ওর মা আর ও আমার পরিচয় নিয়ে বাচবে …………!
।
আমি – কি ওলটা পালটা বলছ মায়াত আমার ও মেয়ে ……………..?
।
রিয়া – না মায়া তোমার মেয়ে না ও শুধু আমার মেয়ে আর তুমি এখন আসতে পার . তুমি আমাদের জন্য অনেক করেছ . তার জন্য আমি সারা জীবন কৃতঙ্গ থাকব . . . . .?
।
আমি – কি সব বলছ তুমি তোমার মাথা ঠিক আছে . আর আমি আমার মেয়ের বিপদে তার পাশে থাকতে পারব না ………………? (অবাক হয়ে)
।
রিয়া – না পারবেন না . আর বারবার আপনার মেয়ে আপনার মেয়ে করবেন না মায়া শুধু আমার . আমি ওর মা আমি ওর বাবা . আপনি এখন আসুন ………….? (রাগি গলাই)
।
আমি – রিয়া প্লিজ …………..( ভেজা গলাই )
।
রিয়া – আপনি কি যাবেন নাকি আমি আমার মেয়েকে নিয়ে চলে যাব ……………..? (রেগে চোখ লাল করে)
।
আমি – ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি , তাও তুমি মায়াকে নিয়ে চলে যেও না . মায়ার এখন চিৎসার প্রয়োজন . (কথাটা বলতেই চোখে পানি এসে গেল )তারপর মায়ার কেবিনের দিকে যেতে লাগলাম .তখনি ……..
রিয়া – আপনি ওইদিকে কোথায় যাচ্ছেন ……………..?
।
আমি – মায়ার কেবিনে . মায়াকে একটু দেখে যায়……………….
।
রিয়া – না আপনি মায়ার সাথে দেখা করতে পারবেন না……………
।
আমি – কেন ………………?( অবাক হয়ে)
।
রিয়া – কারন আমি চাইনা আপনি মায়ার সাথে দেখা করেন …………..
।
আমি – রিয়া প্লিজ আমার সাথে এমন করো না . দয়া করে আমায় মাফ করে দেও ……
।
রিয়া – আপনি দয়া করে আমার সামনে থেকে চলে যান ……
।
তারপর আরও অনেক বার রিয়াকে বুঝালাম কিন্তু রিয়া আমায় হাসপাতালে থাকতে দিল না এমনকি নিজের মেয়েকে একটি বারের জন্য দেখতেও দিল না . রিয়ায় আজকের ব্যবহার আমার কলিজাতে আঘাত করেছে . এদিকে চোখের পানিও আজ আমার কথা শুনছে না .শুধু কান্না হয়ে জড়ে পড়ছে . নিজেকে সামলাতে খুব কষ্ট হচ্ছে . তাই আর সেখানে না থেকে বাড়ি চলে আসলাম . বাড়ি এসে র্ফ্রেস হয়ে রিয়ার কাছে ফোন দিলাম ………..
রিয়া – হালো কে …………….?
।
আমি – আমি রুবেল ……
।
রিয়া – আপনি কেন ফোন দিয়েছেন ………….?
।
আমি – মায়া কেমন আছে ……………?
।
রিয়া – ভালো …………
।
আমি – তুমি আর মায়া কিছু খেয়েছ ………?
।
রিয়া – আপনার না জানলেও চলবে …..
।
আমি – আমি তোমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসতেছি ……..
।
রিয়া – দয়া করে এই ভুলটা করবেন না . আপনি যদি হাসপাতালে আসেন তাহলে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে চলে যাব ……
।
আমি – কেন করছ আমার সাথে এমন …………?
।
রিয়া – কারন আমি চাইনা আপনি আমাদের জীবনে থাকেন ….
।
আমি – আমি কি এতটাই খারাপ যে আমাকে তোমাদের জীবনে রাখতেই চাওনা ……..?
।
রিয়া – জানি না ….
।
আমি – ঠিক আছে তুমি চাওনাতো আমি তোমাদের জীবনে থাকি . ওকে থাকব না . কিন্তু একদিন তুমি আমায় খুজবে কিন্তু পাবেনা . চলে যাব তোমাকে মুক্তি দিয়ে . (কথাটা বলেই ফোনটা কেটে দিলাম )
।
মনে মনে রিয়ার উপর খুব রাগ হচ্ছে ও কেন করছে এমন আমার সাথে .
।
অন্যদিকে রিয়া – আসতে মানা করলাম . আর ও বলল আসবে না . জোর করতে পারল না আমি তো ওর বউ আর মায়া ওর মেয়ে . ও কি অধিকার ফলাতে পারত না . আর অধিকার খাটাবে কেন ওর তো আরেকটা বউ আছে মিস রাইসা . তাই আর আমাদের উপর অধিকার খাটানোর প্রয়োজন নাই. (মনে মনে)
।
তারপর আমি ইচ্ছা না থাকা সত্বেও অফিসে গেলাম . এখন কেবিনে বসে আছি হঠাং করে বাসা থেকে আব্বু ফোন দিল………..
আমি – হ্যা আব্বু বলল ………
।
আব্বু – কিরে তুই বললি আমদের কাছে রিয়া মাকে ফিরিয়ে আনবি কই আসলি নাতো .
।
আমি – আসলে …… আব্বু …….
।
আব্বু – থাক আর আসলে আসলে করতে হবে না. আমরা সিলেট এ এসেছি আর এখন তোর বাড়িতে আসলাম . তুই কোথায় ………….?
।
আমি – কি তোমরা কখন আসলে . . .? আমি তো অফিসে ………
।
আব্বু – কিছুখন আগে আসছি …….এখন রিয়া মায়ের ঠিকানা দে আমি আর তোর গিয়ে ওকে বোঝাব আমাদের কথা ও ঠিক শুনবে ……..
।
আমি – আসলে আব্বু তোমাদের একটা কথা বলা হয়নি……….? (ভয়ে ভয়ে)
।
আব্বু – কি ……….?
।
আমি – আসলে তোমাদের নাতনি অসুস্থ .. (.আর তাই আর কিছু বলার আগেই বাবা বলল)
।
আব্বু –কি আমাদের নাতনি আছে ……
।
নাতনির কথা শুনে আব্বু আম্মু খুব খুশি হল…..
।
আব্বু – কিন্তু কি হয়েছে আমার নাতনির আর ও কোথাই এখন ………….?
।
আমি – এখন হাসপাতালে ………?
।
আব্বু – কোন হাসপাতালে ………..?
।
তারপর আমি আব্বুকে হাসপাতালের ঠিকানা দিলাম ..
আব্বু – ওকে এখন রাখছি . আর আমরা এখনি হাসপাতালে যাচ্ছি..
।
তারপর আব্বু আম্মু হাসপাতালে গেল .
তারপর 2ঘন্টা পর আবার আব্বুর ফোন আসল .
আমি – হ্যা আব্বু বলল.
।
আব্বু – তুই কোথায় ………..?( রেগে )
।
আমি – আমি ত অফিসে কেন আব্বু…………? (ভয়ে ভয়ে)
।
আব্বু – তুই এখনি হাসপাতালে আয় …(রাগে ফায়ার হয়ে)
।
আমি – আচ্ছা আসছি . ভয়ে ভয়ে …
।
তারপর আমি তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বেড়িয়ে পড়ি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য . আর হাসপাতালে যাওয়ার পর যা হল আমার সাথে তাতে আমি আরো অবাক হলাম ……………….
.
.
গল্পটা আরও বড় হবে চলবে কি …..
.
.
.
Wait for next part ………………..
Comments
Post a Comment